পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরম হচ্ছে রাজধানীর মসলার বাজার। ইতোমধ্যে দাম বেড়েছে জিরা, এলাচি ও গুলমরিচসহ বেশ কিছু মসলার দাম। প্রতি বছরই কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বেশি থাকে। এ সুযোগে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী মসলার দাম বাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে মসলার দাম বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে দাম কমছে। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এ অভিযোগ মানছেন না। তারা বলছেন, পাইকারি বাজারে মসলার দাম বাড়েনি।
সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি জিরা গত সপ্তাহের চেয়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, দারুচিনি ৫০ টাকা বেড়ে ৪০০ টাকা ও এলাচি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ১৫০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা, তেজপাতা ২০০ টাকা, লবঙ্গ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, কিচমিচ ৪০০ টাকা, জয়ফল ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা, যত্রিক ১৫০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা, আলু বোখারা ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
অন্যদিকে রাজধানীর মসলার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর মসলার আমদানি বেশি তাই দাম তেমন বাড়েনি। প্রতিদিনের মতো গতকাল বিভিন্ন মসলার দাম ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। মানভেদে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হয় ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকায়, দারুচিনি ২২০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা ও এলাচি কেজিতে ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা। এ ছাড়াও তেজপাতা ৯০ থেকে ১৩০ টাকায়, সাদা গোল মরিচ ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, জয়ফল ৬৮০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায়, যত্রিক ১৩৫০ টাকা থেকে ১৪৫০ টাকা, কিসমিস ২৭০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা, আলু বোখারা ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, কাঠবাদাম ৬০০ টাকা থেকে ৭২০ টাকা এবং পোস্তাদানা ৭৮০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
মসলার দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতা শাহজাহান বলেন, কোরবানির ঈদের আগে পাইকারি বাজারে মসলার দাম বেড়েছে। আমরা খুচরা ব্যবসায়ী; বেশি দামে কিনলে বিক্রিও করতে হয় বেশি দামে।
দক্ষিণ যাত্রবাড়ীর পাইকারি মসলা বিক্রেতা আরিফ জাগো নিউজকে বলেন, মসলার চাহিদা সারা বছর থাকে। তবে ঈদের সময় চাহিদা বেড়ে যায়।। মসলার দাম নির্ভর করে আমদানির উপর। আমদানি বেশি হলে দাম কমবে। আর কম হলে দাম বাড়বে। এবার মসলার আমদানি ভালো। তাই দাম তেমন বাড়েনি। আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই।
খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে মসলার দাম বাড়েনি। ১০-২০ টাকা যা বেড়েছে তা স্বাভাবিক। যা সব সময় ওঠানামা করে। অনর্থক অজুহাত দেখিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন।
ঈদকে সামনে রেখে মসলার দাম বাড়ার বিষয়ে বাংলাদেশ গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী এনায়েতুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, এবার মসলার আমদানি বেশি হওয়ায় তেমন দাম বাড়েনি। পাইকারি বাজারে এলাচি ও জিরার দাম সামান্য বেড়েছে। এর মধ্যে জিরা কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা আর এলাচি বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। অন্যান্য মসলার দাম স্বাভাবিক রয়েছে।
খুচরা বাজারে দাম বাড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক খুচরা ব্যবসায়ী দ্বিগুণ লাভ করছেন। তারা যদি দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় আমাদের কিছু করার নেই। যারা এসব অনৈতিক কাজ করছে সরকারের উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।